Logo
পডকাস্ট ভিডিও টেক-টক গ্রীন জেনারেশন কালচার & ট্রেন্ডস নিউজ এক্সট্রা
ABS.news is Under Development
We will back after:
-21
Days
-23
Hours
-56
Minutes
-56
Seconds

নায়াগ্রায় জলের পতনেই আনন্দ

Super Admin | Published: Monday, July 28, 2025
নায়াগ্রায় জলের পতনেই আনন্দ
ম্যানহাটান থেকে মধ্যরাতে বাসযাত্রা। গন্তব্য নায়াগ্রা। বাসে ওঠার পর থেকেই বব মার্লির বিখ্যাত একটি গানের সুর কানে বাজতে থাকে- ‘বাফেলো সোলজার, ড্রেডড লক রাসতা। দেয়ায়ার ওয়াজ এ বাফেলো সোলজার, ইন দ্য হার্ট অব আমেরিকা...।’ নব্বই দশকে আমাদের মতো অনেক তরুণের প্রিয় গান এটি। কখনও কখনও প্যারোডি করেও গাওয়া হতো। আমার স্মৃতিতে বব মার্লির হঠাৎ ফিরে আসার কারণ হলো বাফেলোর নায়াগ্রা ফলস দেখতে যাওয়া। সাত ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে সকালে বাফেলো শহরে পৌঁছাই। সব কেমন অচেনা লাগে। বাফেলো সোলজারের কথা ভুলে গিয়ে কানে বাজতে থাকে প্রাকৃতিক সুর। যে সুরের উৎপত্তি নায়াগ্রার জলোপ্রপাত থেকে। এক ধরনের উত্তেনা বোধ করতে থাকি নায়াগ্রা ফলস দেখার জন্য। গুগলে সার্চ দিয়ে দেখে নেই আরও কতটা পথ দিতে হবে। ২১ কিলোমিটার দেখার পর পিলে চমকে উঠে। আরিফ হোসেনকে ফোন দেই পরামর্শ নেওয়ার জন্য। তিনি ফোনের ওপর থেকে কুশল জানতে চান। আমার ভ্রমণের বিত্তান্ত জেনে নিয়ে বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করতে বলেন। কিছুক্ষণের ভেতরে সকালের নাস্তা সমেত সাদা গাড়ি নিয়ে হাজির আরিফ। ভাবি (মিসেস আরিফ) যত্ন করে পরটা, মাংস, ডিম পাঠিয়েছেন। এই অচেনা ভূমিতে নিজেকে খুব সৌভাগ্রবান মনে হলো। নিজের কাজ ফেলে আরিফ আমাকে নায়াগ্রা পৌঁছে দিলেন। কোন স্পট থেকে ঝর্ণা ভালো দেখা যায় সেসব বলে দিলেন গাইডের মতো। আরিফ হলেন সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিক। এসএ টিভিতে কাজ করতেন। কয়েক বছর ধরে স্বপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলোতে বাস করছেন। আরিফের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেট পার্কের ভেতর দিয়ে ঝর্নার কাছে ছুটে যাই। দু’চোখ ভরে দেখতে থাকি ওপর থেকে স্বচ্ছ জলের ধারা নিজে পড়ার দৃশ্য। জলোপ্রপাত দেখার সঙ্গে মিউজিক শোনার আনন্দ উপভোগ করতে থাকি। এক জায়গায় বসে দেখতেই থাকি। গিরিখাদের জলে পর্যটকদের ওয়াটার বাস ভ্রম ওপর থেকে দেখাতেও আনন্দ। পকেট খালি হওয়ার ভয়ে ওয়াটার বাসে উঠা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। মনের সঙ্গে লড়াই করে জিতে যাই- জীবনে আর কখনও আসা হবে কিনা জানি না। দুচোখ ভরে সব দেখে নেই। হঠাৎ মনে পড়ে কোনো ছবি তোলা হয়নি। পরে নিজের ও ঝর্নার ছবি তুলতে থাকি। অন্যদের তুলে দেই। ভিডিও করে অফিসে পাঠাই। নায়াগ্রার জলোপ্রপাত দেখতে দেখতে কখন যে গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে বুঝতে পারিনি। সংবিত ফেরে কানাডা থেকে আগত মফিজুর রহমান মুন্নার ফোনে। তিনি বর্ডার থেকে ফোন করেছেন আমার অবস্থান জেনে নিতে। মুন্না হলেন জাতীয় দলের সাবেক পেস বোলার। বিকেএসপিতে আমার এক বছরের সিনিয়র। ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। তাকে সামনে দেখতে পেয়ে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়। অদ্ভূত ভালোলাগা কাজ করতে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা নায়াগ্রা নদী থেকে ঝর্নার উৎপত্তি। মুন্নার সঙ্গে গড়ি থাকায় ঘুরে বেড়াতে সুবিধা হয়। তিনি আমাকে একটি দীপে নিয়ে গেলেন। সাজানো গোছানো বাড়িঘর থাকলেও পুরো দীপটি জনমনশূন্য মনে হতে থাকে। কিছুক্ষণ থাকার পর মনে হতে পারে পরিত্যক্ত দীপ দেশ। মানুষের উপস্থিতি টেন না পেলেও এক মুহূর্তের জন্যও নিরব মনে হয়নি দীপটিকে। বাতাসের সুর, পাখির কলোতান, নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ার শব্দ সারাক্ষণ সো সো করতে থাকে। আমি বঙ্গো সন্তান দুচোখ ভরে বাফেলো, নায়গ্রার সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকি। ফাকে ফাকে গল্প চলে। বুঝতেই পারছেন এমন নৈস্বর্গে ছবি না তোলার কারণ নেই। সন্ধ্যা সাতটায় মুন্না ভাই আমাকে বাস কাউন্টারে নামিয়ে বর্ডার পেরিয়ে চলে গেলেন কানাডার ঠিকানায়। সোয়া আটটায় আমার বাস। আরিফ দুপুরে ফোনে খোঁজ নেন। সন্ধ্যায় আমি তাকে ফোন দেই, সুযোগ পেলে একবার দেখা করতে বলি। কাজ ফেলে আরিফ আসেন, স্বৃতি হিসেবে দুজনে কয়েকটি ছবি তুলি। আরিফের কাছ থেকে বিদায় নেই। প্রিয়জন হারানোর বেদনা মোচড় দিয়ে ওঠে। পরিবার নিয়ে ভালো থাকবেন আরিফ। মুন্না ভাই দেখা হবে আমাদের জননী জন্মভূমিতে। আমি ক্ষণিকের অতিথি বিদায় নিলাম। ওহ, একটা বিষয়ে বলা হয়নি। চেনা পরিচিত কেউ নায়াগ্রা ফলস ভ্রমণের ছবি ফেইসবুকে পোস্ট করলে আমি মনে মনে বলতাম, কোনো দিন কি এই জলোপ্রপাত স্বচক্ষে দেখতে পাব? প্রভূর কৃপায় আমি ছবি পোস্ট করলাম। ভালো থাকুন। সমকাল ভ্রমণ কাহিনী পড়ুন।
Leaving absnews Your about to visit the following url Invalid URL

Loading...
Comments


Comment created.

মোস্ট পপুলার

সাবস্ক্রাইব টু নিউজলেটার

আমার এলাকার খবর

Weather Outlook

Clear

Dhaka, Bangladesh

Wind: 10.1 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1014 mb

21.7°C

Thu

21.8°C

Fri

21.9°C

Sat

22.4°C

মিডিয়া নিয়ে আরও পড়ুন